মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মানিকখালী গ্রামে যৌতুকের দাবীতে পুত্রবধূ তানজিলা বেগমের (২৬) উপর শ্বশুর ও শাশুড়ির অমানুষিক শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার নিন্দার ঝড় উঠে। তানজিলার স্বামী নাসির মুন্সি সৌদী প্রবাসী।
শনিবার রাতে তানজিলার বাবা মো. সিদ্দিক মীর বাদী হয়ে মেয়ের শ্বশুর মো. ধলু মুন্সী ও শাশুড়ি আলেয়া বেগম ও চাচা শশুর নুর মোহাম্মদ মুন্সীকে আসামি করে মঠবাড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ রাতেই নির্যাতিতা গৃহবধূর শ্বাশুড়ি আলেয়া বেগমকে গ্রেফতার করে রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেছে।
থানা ও মামলা সূত্রে জানাযায়, উপজেলার মানিকখালী গ্রামের ধলু মুন্সীর ছেলে সৌদি প্রবাসী নাসির মুন্সীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মীরের মেয়ে তানজিলার বিয়ে হয়। নাসির বর্তমানে সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় সম্প্রতি শ্বশুর ও শাশুড়ি বসত ঘর তোলার জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক আনার জন্য দীঘদিন ধরে তানজিলার ওপর চাপ দিয়ে আসছিলো। এ নিয়ে পুত্রবধূর সঙ্গে প্রায়ই শ্বশুর-শাশুড়ির ঝগড়া হয়। তানজিলা বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করলে বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্বশুরের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শ্বশুর তাঁর পুত্রবধূকে টানাহেঁচড়া করে মাটিতে ফেলে প্রকাশ্যে মারধর করেন। এ সময় শাশুড়ি ও চাচা শ্বশুরও তানজিলাকে মারধর করেন।
এসময়ে তানজিলার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি করেন। গত চারদিন ধরে দু’ সন্তানের জননী তানজিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে মারধরের এই ঘটনা অজ্ঞাত প্রত্যক্ষদর্শী মুঠোফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে নিন্দার ঝড় উঠে। এ ঘটনার পর থেকে তানজিলার শ্বশুর পালিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফেরদৌস ইসলাম বলেন, তানজিলা বেগমের শরীরে জখমের চিহ্ন আছে। তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মঠবাড়িয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুজ্জামান মিলু মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গৃহবধূ তানজিলাকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর আমরা মামলা নিয়েছি। এ মামলার এজাহার নামীয় ওই গৃহবধূর শাশুড়ি আলেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করে রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
Leave a Reply